নৌ বীমা এর পরিচয় ও এর শর্তাবলি
ভূমিকা
এই সুন্দর পৃথিবীতে নাই জল আর স্থলের অবস্থান এমনই যে, একের অনুপস্থিতিতে অন্যটা যেন বড়ই বেমানান ও অসম্পূর্ণ।জলের সংস্পর্শ ছাড়া স্থলভাগ সে তো মৃতপায় মরুভুমি,যেখানে প্রাণের স্পন্দন খুব একটা থাকে না। অন্যদিকে স্থলভাগ ছাড়া শুধুই জল তাও যেন রহস্য ধেরা এক সাগর। মানুষ কবে এই জলপথে চলাচল শুরু করেছিল তার ইতি নেই। মানুষ স্থলভাগে যখনই একটু নড়ে-চড়ে চলার চিন্তা করেছে তখনই ছোট-বড় খাল,নদ নদী তাকে পার হতে হয়েছে।তাই মনিুষের চলার ইতিহাস আর জলপথের ইতিহাস সেটা খুব বেশি দিনের পার্থক্য ঘটবার কথা নয়।
আদিযুগে রস্তাঘাট বলে তো কিছু ছিল না আর পাহাড় জঙ্গলে ঢাকা ছিল পৃথিবীর স্থলভাগ। তার মধ্য দিয়ে এক জনপদ হতে অন্য জনপদে যাওয়া ছিল নিতান্তই কষ্টকর বনজঙ্গল ভয় তো ছিলই। পাহাড়-পর্বত আর মরুভূমি তাও ছিল দুর্গম। এসব স্থলভাগ দিয়ে কোনো কিছু বয়ে নিয়ে যাওয়া ছিল অনেকটাই মানুষের সাধ্যের অতীত । তাই মানুষ যখনই বুঝেছে পানিতে ভেসে চলা যায়, তখন থেকেই চলাচল আর মালামাল পরিবহনে জলপথই হয়ে উঠেছে অতি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বর্ষার পানি কমে গেলে খাল-বিল আর নদ-নদীর জেগে ওঠা চর বা স্থলভাগই হয়ে উঠেছে মানুষের বিচরণের প্রধান কেন্দ্র। আর তাই তো প্রাচীনকালে বিভিন্ন শহর, বন্দর আর সভ্যতার উন্মেষ ঘটেছিল প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই জলপথকে কেন্দ্র করে।
নৌ-পথ বা জলপথ মানুষ চলাচল ও মালানাল পরিবহনে কিছুটা সহজ মনে হলেও তা কম ঝুঁকিপূর্ণ ছিল না। ঝড়-তুফানে নৌকা ডুবি ঘটতো জলদস্যুদের আক্রমণেও মালের ক্ষতি হতো। পরবর্তীকালে সাগর পথে চলাচলের মতো জাহাজ তৈরি হলেও প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক দুযোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো উপায় মানুষ আয়ত্ত করতে পারেনি। ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ার জলপথে যাতায়াত বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে। মানুষ বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে এগিয়ে গেছে। তার চিন্তা ও বুদ্ধি দিয়ে যতটা সম্ভব ঝুঁকি এড়িয়ে যাওয়া বা কমানোর চেষ্টা করেছে। জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় এবং প্রচেষ্টা জোরদার হয়েছে বটে কিন্তু এখনও জলপথে চলাচল নানান কারণেই ঝুঁকিপূর্ণ ।
জলপথে প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক নানার ঝুঁকি ও প্রতিকূলতার হাত থেকে জাহাজ জাহজস্থির মালামাল এবং কাপ্তান, ক্রু ও যাত্রীদের জীবন রক্ষায় সঠিক সাফল্য অর্জন করতে না পারলেও এই ক্ষতি কমানোর বা আর্থিকভাবে মোকাবিলার প্রবাস চালিয়েছে। এক্ষেত্রে নিরম্নোক্ত প্রচেষ্টাগুলো ছিল উল্লেখযোগ্য
১. সমুদ্রে পণ্য নিক্ষেপকরণ (Penison) : জাহাজকে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য এই প্রথার জাহাজতি পরাতে সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হতো। যে সকল পণ্য রক্ষা পেতো তার মালিকগণ নিক্ষেপিত পণ্যের ক্ষতি বহন করবেন। এরূপ প্রথা কিছুটা পরিবর্তিত ও পরিমার্জিতভাবে এখনও চালু রয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৯১৬ অব্দের দিকে রোচ দ্বীপে এৰূপ কথা প্রচলিত ছিল বলে ইতিহাস থেকে জানা যায় ।
২. ঋণদান প্ৰথা (Botomry): এই প্রথার যে সকল ব্যবসায়ী জাহাজ বা জাহারাস্থিত পণ্যের জন্য ব্যাংক ঋণ গ্রহণ করবেন, জাহাজ ও জাহাজের পণ্যের ক্ষতি হবে ব্যাংককে ঐ পরিশোষ করতে হতো না। সুদের হার খুব উচ্চ থাকায় এই প্রথা খুব বেশি দিন কার্যকর হয়নি। ৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট জাস্টিনিয়ানের নির্দেশনামায় Botomury Bond এর চরে পাওয়া যায়।
৩. পারস্পরিক বিমা পরিকল্পনা (Aiuries comumtunes): ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের কোনো কোনো দেশ ও পরবর্তী সময়ে এ ধরনের থিমা পরিকল্পনার প্রচলন ঘটেছিল। এর মূলনীতি ছিল ‘সকলের তরে সকলে’। এরূপ পরিকল্পনার আওতায় এর সদস্যদের মধ্য থেকে কারও ক্ষতি হলে সবাই নিলে তা পূরণ করতো। পরবর্তী সময়ে সদস্যদের মধ্যে অন্য এর ক্ষতিপূরণ এগিয়ে আসার আগ্রহ কমে যাওয়ায় এ ধরনের বিমা পরিকল্পনা আর এগুতে পারেনি।
৪. সমুদ্র রক্ষীবাহিনী (Sea caravany): জলদস্যুদের হাত থেকে জাহাজ ও জাহাজের পণ্য রক্ষার জন্য ধরনের বাহিনী গঠন করা হতো। ১০৬০ খ্রিস্টাব্দে অড্রিয়াটিকের এ্যানি শহরে প্রাপ্ত এক দলিল হতে জানা যায়, জলদস্যুরা আক্রমণ করলে তারা বাধা দিত এবং জাহাজ ও এর পণ্য রক্ষা করত। যে সকল জাহাজ পণ্য এ বাহিনীর কারণে নিরাপদে গন্তব্যে দিয়ে পৌঁছার, তার মালিকগণ এর খরচ বহন করতেন। প্রাকৃতিক ঝুঁকি মোকাবিলা এর দ্বারা সম্ভব ছিল না বিধায় এরূপ ব্যবসারও বেশিদিন কার্যকর হয়নি।
এ সকল ব্যবস্থা কার্যকর না হওয়ায় ব্যবসায়ী সম্প্রদায় আর্থিক ক্ষতিপূরণের ঝুঁকিকে ব্যবসায়ের সওদা বা উপকরণ হিসেবে গ্রহণ করা যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে থাকে। ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৮২ সালে ফ্রান্স হতে বিতাড়িত ইহুদিগণ ইটালিতে এসে সর্বপ্রথম নৌ-বিমার প্রবর্তন করেন। এতে নৌ-বিমায় প্রিমিয়ামের ঢাকা নির্ধারণ করা হতো এবং ক্ষতি হলে বিমাকৃত টাকা পরিশোধের ব্যবস্থা ছিল। পরবর্তী সময়ে এরূপ ব্যবসায় দ্রুত ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌ-বিমা ব্যবসায়ের প্রচলন ঘটে। উল্লেখ্য, নৌ-বিমা ব্যবসায়ের মধ্য দিয়েই মূলত ব্যবসায়ের উৎপত্তি। তাই নৌ বীমা ব্যবসায়ের উৎপত্তি আর বিমা ব্যবসায়ের উৎপত্তি কার্যত একই সূত্রে গাঁথা।
নৌ বীমা ব্যবসায়কে গতিশীল করার জন্য এ পর্যায়ে আইন প্রণীত হয়। ১৯৩৭ সালে ব্রুসেলোনায় নৌ বীমা সংক্রান্ত এক অধ্যাদেশ প্রণীত হয়। রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ ১৫৫৬ সালে স্পেনের জন্য এবং ১৫৮৩ সালে এন্টয়াগের জন্য বিমা পরিচালনা বিধি প্রণয়ন করেন। এতে নৌ-বিমা ব্যবসায় আধুনিক রূপ লাভে সমর্থ হয়। ১৩শ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইটালি হতে বিতাড়িত হয়ে ইহুদি ব্যবসারীগণ লন্ডনের লোম্বার্ড স্ট্রিটে এসে ব্রিটেনে বিমা ব্যবসায়ের উন্নয়নে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখে। লন্ডনের দায়গ্রাহক ব্যবসায়ী ন (Lloyd’s) দশ শতকে নৌ-বিমা ব্যবসায়ের আধুনিকীকরণে যথেষ্ট অবদান রাখে শিল্প বিপ্লবের পর নৌ-বিমা ব্যবসায়ে নতুন মাত্রা যোগ হয় এভাবেই পৃথিবীর দেশে দেশে নৌ-বিমা ব্যবসার জনপ্রিয়তা লাভে সমর্থ হয়।
নৌ বিমা এর সংজ্ঞা
নির্ধারিত প্রিমিয়ামের বিনিময়ে নৌ-পথে চলাচলকারী জাহাজ ও জাহাজস্থিত পণ্যসামগ্রী বিমাকৃত ঝুঁকি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে বিমাচুক্তি করা হয় তাকে নৌ বীমা বলে।
নৌ বীমা চুক্তিকে ক্ষতিপূরণের চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট মেয়াদ বা সমুদ্রযাত্রার জন্য বিমাপত্রে উল্লিখিত কোনো কারণে জাহাজ ও জাহাজস্থিত পণ্য ও এর মাশুলের ক্ষতি হলেই শুধুমাত্র বিমা কোম্পানি ক্ষতিপূরণ করে। সম্পূর্ণ ক্ষতির জন্য বিমা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ বিমাকৃত অঙ্ক পরিমাণ ক্ষতিপুরণ করে। আর আংশিক ক্ষতি হলে তাও পূরন করে থাকে।
নিম্নে নৌ বীমা এর কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞার উল্লেখ করা হলো
১. Halsbury এর মতে, “যে চুক্তির দ্বারা বিমাকারী, বিমাগ্রহীতাকে নির্দিষ্ট পন্থায় ও নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত সামুদ্রিক ক্ষতি অর্থাৎ নৌ-অভিযান সংক্রান্ত ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করে থাকে নৌ বীমা বলে।
২. M. N. Mishra, “Marine innirance contract is a contract between insurer and ired whereby the insurer wilertakes to indemnify the insured in a manner and to the interest thereby agreed against marine lasses incident to marine adventure.” অর্থাৎ নৌ বিমা চুক্তি হলো বিমাকারী ও বিমাগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত এমন একটি চুক্তি যেখানে সার নিয়োজিত জাহাজ এবং এর সাথে সম্পৃক্ত স্বার্থের কোনো ক্ষতির জন্য বিমাকারী সম্পাদিত চুক্তি অনুসারে বিমাগ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব গ্রহণ করে।
৩. ১৯০৬ সালের ইংরেজি বিমা আইনের ১৪ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, নৌ বিমা হলো এমন একটি চুক্তি যেখানে বিমাকারী, বিমগ্রহীতাকে সমুদ্র যাত্রা সংক্ষর বিরুদ্ধে নির্ধারিত পন্থায় ও নির্ধারিত সীমা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের দায় গ্রহণ করে। A contract of marine insurance is a contract whereby the insurer undertakes to indeminfy the assured, in manner and to the extent mereby agreed, against marine losses, that is to say the losses incident to marine adventare.)
৪. বাংলাদেশে বহাল ১৯৩৮ সালের বিমা আইনের ২(১৩-ক) ধারনা উল্লেখ আছে যে, নৌ বীমা ব্যবসায় বলতে মালামাল, মাশুল এবং অন্যান্য আইনসঙ্গত স্বার্থসহ যেকোনো ধরনের জাহাজের ঝুঁকি অথবা বিমাকৃত জাহাজযোগে আনা-নেয়ার জন্যে নির্ধারিত মালামাল, মাশুল, পণ্যদ্রব্যাদি, বাণিজ্যিক সামগ্রী ও এরূপ অন্য যেকোনো ধরনের সম্পত্তির ভুল বা জল অথবা উভয় পথে পরিবহনের ঝুঁকি এবং উল্লেখ থাক বা না থাক পরিবহনের আনুষঙ্গিক অথবা তদসংশ্লিষ্ট পণ্য গুদাম সংক্রান্ত বা এরূপ কোনো ঝুঁকি এবং নৌ- বিমাপত্রসমূহে রীতিগতভাবে অন্যান্য যেসব ঝুঁকি অন্তর্ভুক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে গঠিত বিমা চুক্তিসমূহ কার্যকরীকরণ বা সম্পন্ন করার ব্যবসায়ী কার্যক্রমকেই বুঝায়।
(Marine insurance business means the business of effecting contracts of insurance upon vessels of any description, including cargoes, freights and other interests which may be legally insured in or in relation to sach vessels, cargoes, and freights, goods, wares, mercandise and property of whatever description insured for any transit by land or water or both and whether or not including warehouse-risks or similar risks in addition or as incidental to nich transit auf includes any other risks customarily included among the risks insured against in marina insurance policies.)
উপরোক্ত সংঙ্গা ও আলোচনা বিশ্লেষণ করলে বলা যায় নিদিষ্ট পরিমাণ প্রিমিয়ামের বিনিময়ে বিমাগ্রহীতাকে নির্দিষ্ট সমুদ্রযাত্রার জন্য বা সময়ের জন্য জাহাজ, জাহাজস্থিত পণ্য, জাহাজ ভাড়া বা মাশুল, পণাস্ত্র জাহাজে উঠানো-নামানোর সাথে সম্পৃক্ত গুদামজাতকরণ বা এসবের সাথে সম্পৃক্ত কোনো ঝুঁকি বা ক্ষতির জন ক্ষতিপূরণের নিশ্চয়তা দিয়ে যে চুক্তি সম্পাদন করে তাকে নৌ বীমা / নৌ বীমা চুক্তি বলে।
নৌ বীমা চুক্তির শর্তাবলি
নৌ বীমা চুক্তি লিখিত ও স্ট্যাম্পযুক্ত আনুষ্ঠানিক চুক্তি। এরূপ চুক্তিতে বিমাকারী ও বিনগ্রহীতা কতিপয় শর্ত যুক্ত করতে পারে, এগুলোকে ব্যক্ত বা প্রকাশিত শর্ত বলে আবার যে সকল শর্ত বলা না হলেও চুক্তির স্বাভাবিক ধারা ও পারিপার্শ্বিক ব্যবস্থা হতে উদ্ভূত হয় তাকে অব্যক্ত বা অপ্রকাশিত শর্ত বলে। নৌ বীমা চুক্তিতে এ উভয় ধরনের শর্ত বিদ্যমান থাকে । নিম্নে তা আলোচনা করা হলো
ক) ব্যক্ত বা প্রকাশিত শর্তাবলি
১. সমুদ্রযাত্রার তরিখ (Date of voyage) : সংশ্লিষ্ট জাহাজটি মালামাল নিয়ে নির্দিষ্ট সমুদ্র বন্দর থেকে কোন মাসের কোন দিন লক্ষ্যস্থলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে তা নৌ বীমা চুক্তিপত্রে স্পষ্টভাবে লেখা থাকে। এ ছাড়াও জাহাজটি পথিমধ্যে কোন্ কোন্ বন্দরে ভিড়াবে, সম্ভাব্য কোন তারিখে সেখানে পৌঁছাবে, কবে সেখান থেকে ছেড়ে যাবে ইত্যাদি বিষয়ও এতে উল্লেখ থাকতে পারে। এতে জাহাজটির সার্বিক সমুদ্রযাত্রা সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় ।
২. বিমাকৃত সম্পদের বৈধতা (Legality of insured goods) : বিমাকৃত সম্পদ এবং মালামাল নিয়ে যাতে বিমা প্রতিষ্ঠানকে কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয় সে জন্য বিমাকত সম্পদের নিরপেক্ষতা অর্থাৎ বহনযোগ্য মালামাল বৈধ, জাহাজ ও মালামালের কাগজপত্রাদি বৈধ, আন্তর্জাতিক কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞামুক্ত ইত্যাদি বিষয়ে বিমাগ্রহীতাকে প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। এগুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলে বিমা প্রতিষ্ঠান বিপদ ও ঝামেলামুক্ত এবং নিরাপদ থাকতে পারে ।
৩. রক্ষী বহর সাথে রাখা ( Manage sea caravans ) : সংশ্লিষ্ট জাহাজটির স্বার্থে এতে প্রয়োজনীয় রক্ষী বহর রাখার বিষয়ে চুক্তিপত্রে শর্ত আরোপ করা হতে পারে। দীর্ঘ সমুদ্রপথে জাহাজটি অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক শত্রু দ্বারা যেকোনো মুহূর্তে আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাই জাহাজে রক্ষা বছর রাখার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। বিমাকারী এ বিষয়টি চুক্তিপত্রে উল্লেখ করে তার ঝুঁকি অনেকটা কমাতে পারে।
খ) অব্যক্ত বা অপ্রকাশিত শর্তাবলি
১. জাহাজের সমুদ্রে চলাচলযোগ্যতা ( Sea worthiness of the ship): যখন নৌ বীমা চুক্তি সম্পাদন করা হয় তখন বিমাপত্রে উল্লেখ না থাকলেও এটা ধরে নেয়া হয় যে, জাহাজটির সমুদ্রে অভিযান বা চলাচলের যোগ্যতা এবং সেই সাথে পণ্য বোঝাই করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। চলাচলের যোগ্যতা বলতে জাহাজটির যান্ত্রিক ও কারিগরি যোগ্যতা এবং চালানোর জন্য যে সকল প্রয়োজনীয় জনবল ও উপায়-উপকরণের প্রয়োজন তার উপস্থিতিকে বুঝায়। এরূপ যোগ্যতা ছাড়া বিমা চুক্তি করা হলে এবং বিমাগ্রহীতার কোনো ক্ষতি হলে তজ্জন্য বিমাকারীকে দায়ী করা যায় ।
২. যাত্রার বৈধতা (Legality of the voyage) : বিমা চুক্তিতে উল্লেখ না থাকলেও ধরে নেয়া হয় যে, যে পথে পণ্য বহন করা হবে ঐ পথে পণ্য বহনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও বৈধ কাগজপত্র জাহাজ কোম্পানির রয়েছে। এ ছাড়া যে পথে পণ্য বহন করা হবে সেই পথে কোনো আন্তর্জাতিক বাধা-নিষেধ রয়েছে কিনা সেটাও এক্ষেত্রে
আরো জানুন: