বাজারের শ্রেণিবিভাগ ,আয়তন বা পরিধি, সময় এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বাজাররের প্রকারভেদ।
আয়তন বা পরিধি, সময় এবং প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বাজারকে বিভক্ত করা যায়। বাজারের শ্রেণিবিভাগ বিভিন্নভাবে করা হয়। নিচে ছকের মাধ্যমে এটি দেখানো হলো:—
১. আয়তন বা পরিধি অনুসারে ৩ প্রকার।যথা:
i.স্থানীয় বাজার
ii.জাতীয় বাজার
iii. আন্তর্জাতিক বাজার
২. সময় অনুসারে ৪ প্রকার।যথা:
i .অতি স্বল্পকালীন বাজার
ii.স্বল্পকালীন বাজার
iii. দীর্ঘকালীন বাজার
iv.অতি দীর্ঘকালীন বাজার
৩. দ্রব্যের প্রকৃতি অনুসারে ৪ প্রকার।যথা:
i .পণ্যের বাজার: পাট, চা,চালের বাজার
ii.উপকরণ বাজার
iii. শ্রম বাজার
iv.অর্থবাজার, মূলধন বাজার
৪.প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে বাজার ২প্রকার।যথা:
i. পূর্ণ প্রতিযোগিতার বাজার (Perfect competitive market)
ii. অপূর্ণ প্রতিযোগিতার বাজার(Imperfect competitive market)
৫.অপূর্ণ প্রতিযোগিতার বাজার (Imperfect competitive market) আবার ৯ প্রকার।যথা:
i. একচেটিয়া বাজার (Monopoly market)
ii. একচেটিয়া প্রতিযোগিতামূলক বাজার (Monopolistic competition market)
iii. ডুয়োপলি বাজার (Duopoly market)
iv. অলিগোপলি বাজার (Oligopoly market)
v. দ্বিপাক্ষিক একচেটিয়া বাজার (Bilateral monopoly market)
vi. মনোপসনি/একচেটিয়া ক্রেতা (Monopsony market )
vii. অলিগোপসনি বাজার (Oligopsony market)
viii. ডুয়োপসনি বাজার (Duopsony market)
ix. কার্যকর প্রতিযোগিতামূলক বাজার (Workable competition Market). ডুয়োপলি বাজার (Duopoly market)
৬.আয়তন বা পরিধি অনুসারে
আয়তন বা পরিধি অনুসারে বাজারকে তিন শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।যথা-
i. স্থানীয় বাজার।
ii. জাতীয় বাজার ।
iii. আন্তর্জাতিক বাজার।
i. স্থানীয় বাজার (Local Market): যে পণ্যের বাজার দেশের একটি বিশেষ স্থান বা অঞ্চলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তাকে স্থানীয় বাজার বলে) যেমন— দেশের একটি নির্দিষ্ট স্থানের মাছের বাজার, চালের বাজার, শাকসবজির বাজার প্রভৃতি।
ii. জাতীয় বাজার (National Market): কোনো পণ্যের বাজার যদি একটি দেশের সকল বিভাগ তথা সারা দেশজুড়ে বিস্তৃত হয় তাহলে তাকে জাতীয় বাজার বলে। যেমন— দেশীয় বস্তু, প্রসাধনী প্রভৃতির বাজার জাতীয় বাজার। অর্থাৎ বাবুর হাটের বা টাঙ্গাইলের কাপড়ের বাজার, তারাবো বিসিকের, জামদানি পল্লি, মিরপুর বেনারসি পল্লি।
iii.আন্তর্জাতিক বাজার (International Market): কোনো দ্রব্যের বাজার যদি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে কয়েকটি দেশজুড়ে তথা পৃথিবীব্যাপী বিস্তৃত থাকে, তবে তার বাজারকে আন্তর্জাতিক বাজার বলে। যেমন- বাংলাদেশের পাটের বাজার, চায়ের বাজার, তৈরি পোশাকের বাজার, বাহরাইনে মুক্তার বাজার সোনার বাজার ইত্যাদি। তাই এসব দ্রব্যের বাজার আন্তর্জাতিক বাজারের অন্তর্ভুক্ত।
৭.সময় অনুসারে (According to time period )সময়ের ভিত্তিতে বাজারকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা
i. অতি স্বল্পকালীন বাজার (Very Short Period Market): যে দ্রব্যের ক্রয়-বিক্রয় অতি স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হয় অর্থাৎ কয়েক ঘণ্টা বা কয়েকদিন স্থায়ী হয় তখন সে বাজারকে অতি স্বল্পকালীন বাজার বলে। এ ধরনের বাজারে অস্থায়ী ও পচনশীল দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় হয়। যেমন— মাছ, দুধ, শাকসবজি ইত্যাদির বাজার। অধ্যাপক মার্শালের মতে, যে বাজারের স্থায়িত্ব কয়েক ঘণ্টা, একদিন, দুদিন বা কয়েক দিন হয় তাই অতি স্বল্পকালীন বাজার।
ii.স্বল্পকালীন বাজার (Short Period Market): যে বাজারে দ্রব্যের চাহিদার পরিবর্তনের সাথে সাথে যোগান সামান্য পরিবর্তিত হয় তাকে স্বল্পকালীন বাজার বলে। অধ্যাপক মার্শালের মতে, ‘যে বাজার কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস স্থায়ী হয় তাই হলো স্বল্পকালীন বাজার। যেমন— শাড়ি, লুঙ্গি প্রভৃতির বাজার স্বল্পকালীন বাজার
iii. সীর্ঘকালীন বাজার (Long Term Period Market): যে বাজারে দ্রব্যের চাহিদা পরিবর্তনের সাথে সাড়া দিয়ে যোগান পরিবর্তন করা যায় তাকে দীর্ঘকালীন বাজার বলে। এক্ষেত্রে সব উপকরণই পরিবর্তনযোগ্য। এ বাজারে চাহিদা ও যোগানের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে দ্রব্যের দাম নির্ধারিত হয়। যেমন- আসবাবপত্রের বাজার। –
iv. অতি দীর্ঘকালীন বাজার (Very Long Term Period Market): যে বাজারের স্থিতিকাল অতি দীর্ঘ এবং যেখানে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটে তাকে অতি দীর্ঘকালীন বাজার বলে। এ বাজারে ক্রেতার রুচি, বুভ্যাস, জ্ঞান ইত্যাদির আমূল পরিবর্তন ঘটতে পারে। ফলে চাহিদারও ব্যাপক পরিবর্তনের আশঙ্কা থাকে। যেমন— সোনার বাজার।
ধন্যবাদ সবাইকে ।