?> বায়' সালাম ও বায়' মু'আজ্জালের পার্থক্য - Best Information

বায়’ সালাম ও বায়’ মু’আজ্জালের পার্থক্য

বায়সালাম বায়মুআজ্জালের পার্থক্য (Difference between Bai-Salam and Bai-Muazzal)

বায়সালাম বায়মুআজ্জালের পার্থক্য নিম্নরূপ :

. শাব্দিক পার্থক্য : আরবি শব্দ ‘মু’আজ্জাল’ আজল থেকে এসেছে যার অর্থ পিছিয়ে দেয়া অর্থাৎ বিলম্বে প্রাপ্য প্রদান করা। অপরপক্ষে আরবি শব্দ ‘সালাম’ অর্থ অগ্রিম ক্রয় । এ পদ্ধতিতে ব্যাংক বিনিয়োগের অর্থ গ্রাহককে সরাসরি প্রদান করে।

 

. পরিভাষাগত পার্থক্য : ভবিষ্যতের নির্ধারিত কোনো সময়ে একসাথে অথবা নির্ধারিত কিস্তিতে মূল্য পরিশোধ করার শর্তে পণ্যসমাগ্রী বিক্রয় করাকেই বায়’ মু’আজ্জাল বলে। নগদে বিক্রয়কালে পণ্যের যে দাম নেয়া হয় বায়’ মু’আজ্জাল  পদ্ধতিতে বিক্রয়কালে তার চেয়ে কম দামে অথবা বেশি দামে পণ্য বিক্রয় করা যেতে পারে। অপরপক্ষে বায়’ সালাম এমন একটি চুক্তি যাতে পণ্যের মূল্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রদান করা হয় এবং নির্দিষ্ট / কাঙ্ক্ষিত পণ্য ভবিষ্যতের এক সুনির্দিষ্ট সময়ে সরবরাহ করা হয়। বায়’ সালামের মালামালের মূল্য বিনিয়োগ গ্রাহককে অগ্রিম প্রদান করা হয় এবং তার নিকট থেকে মালামাল নির্দিষ্ট মেয়াদান্তে গ্রহণ করা হয়।

 

. মালের মালিকানা দখল : বায়’ মুআজ্জালে ক্রেতার কাছে বিক্রি করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট মালামাল ব্যাংকের মালিকানা ও দখলে থাকতে হবে। মাল ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করার পূর্ব পর্যন্ত মালের যাবতীয় ঝুঁকি ব্যাংককে বহন করতে হবে। অপরপক্ষে বায়’ সালামের ক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয়কালে পণ্যের অস্তিত্ব থাকে না।

 

. ঝুঁকি : বায়’ মুআজ্জালে ব্যাংক যখনই মাল ক্রয় করবে এবং মালের ওপর যখনই ব্যাংকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন থেকে গ্রাহকের কাছে হস্তান্তর করার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মালের ক্ষয়-ক্ষতির ঝুঁকি নিতে হয়। এই ঝুঁকি থেকেই মুনাফা নির্ধারিত হয়। অপরপক্ষে বায়’ সালামের ক্ষেত্রে চুক্তি স্বাক্ষরের পর অনতিবিলম্বে চুক্তি উল্লিখিত মালের ক্রয়মূল্য পরিশোধ করতে হবে। বায়’ সালামে দু’টি পণ্যের বিনিময় হয়। এতে রূপান্তর ও ঝুঁকি আছে।

 

. চুক্তি : বায়’ মুআজ্জালে ব্যাংক বিক্রেতা ও ক্রেতার সাথে যে ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করবে তাতে মালামালের যাবতীয় গুণাগুণ, ধরন, ওজন ও মূল্য ইত্যাদি লেখা থাকে। অপরপক্ষে বায়’ সালাম পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে লিখিত চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। চুক্তিপত্রে পণ্যের দাম, পরিমাণ, গুণাগুণ, দাম পরিশোধের সময় ও পদ্ধতি, পণ্য সরবরাহের সময়, স্থান ও ধরন ইত্যাদি অনেক বিষয় লেখা থাকে।

 

. মালের ক্রেতা বিক্রেতা : বায়’ মু’আজ্জালের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ গ্রাহক মালামালের ক্রেতা আর ব্যাংক এ পদ্ধতিতে বিক্রেতা। অপরপক্ষে বায়’ সালাম পদ্ধতিতে বিনিয়োগ গ্রাহক বিক্রেতা এবং ব্যাংক ক্রেতা।

 

. পণ্যমূল্য পরিশোধ : বায়’ মু’আজ্জালে মালামাল তাৎক্ষণিকভাবে সরবরাহ করা হয় এবং মূল্য পরিশোধ করা হয় বাকিতে। বায়’ সালামে মূল্য পরিশোধ করা হয় আগে এবং মালামালের সরবরাহ হয় পরে।

 

. পণ্যের ধরন : বায়’ মু’আজ্জাল যেকোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যবহার করা যায়। অপরপক্ষে বায়’ সালাম পদ্ধতি কৃষি উপকরণ এবং শিল্পের কাঁচামালের জন্য অর্থায়নের ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয় ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *