?> হযরত ঈসা (আ) এর জীবনী - Best Information
   হযরত ঈসা (আ) এর জীবনী

হযরত ঈসা (আ) এর জীবনী

                     হযরত ঈসা (আ) এর জীবনী

হযরত ঈসা (আ.) আজ হতে ২০০০ হাজার বছর পূর্বে জেরুজালেমে জন্ম গ্রহণ করেন। তার জন্ম মানব ইতিহাসে এক বিস্ময়কর ও ব্যতীক্রমধর্মী বিষয় ও অলৌকিক ঘটনা। হযরত ঈসা (আ.) এর মাতা হযরত মরিয়ম (আ.) সদা বায়তুল মাকদাসে আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। একদা তিনি গোসল করার জন্য নিজ কক্ষের পূর্বে প্রান্তে একটি পর্দার অভ্যন্তরে চলে গেলেন। হযরত মরিয়ম (আ.) পর্দাবৃত গোসল খানার মধ্যে অপরিচিত যুবক দেখে থমকে গেলেন। তিনি ছিলেন একজন ফেরেস্তা বললেন, “আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে আমি একজন সংবাদ বাহক তিনি আপনাকে একটি পবিত্র সন্তান দান করবেন। মরিয়ম বললেন, আমাকে তো ইতোপূর্বে কোন পুরুষ স্পর্শ করেনি।এ অতঃপর জিব্রাইল (আ.) সামনে অগ্রসর হয়ে তার মুখে ফুঁক দিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। হযরত মরিয়ম (আ.) নিজ আবাসস্থানে চলে আসলে তার দেহের ভিতরে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে লাগলো এবং বুঝলেন তিনি গর্ভবর্তী হয়েছেন। মরিয়ম কাউকে কিছু না। বলে চিন্তিত অবস্থায় প্রভুকে স্মরণ করতে লাগলেন। অতঃপর মরিয়ম (আ.) লোকালয় ত্যাগ করে নির্জন স্থান বাইতুল লাহামে চলে গেলেন। তথায় ঈসা (আ.) কে প্রসব করার পর তাঁকে নিয়ে লোকালয়ে ফিরে এলে লোকেরা অপবাদ দিতে লাগলো। তদুত্তরে মরিয়ম (আ.) কিছু না বলে শুধু নবজাত শিশুর দিকে ইঙ্গিত করলেন। তারা বললো এই শিশু কি করে কথা বলবে? তখন ঈসা (আ.) বললেন

وقال إني عبد الله آناني الكتاب وجعلني نبيا * وجعلني مباركا أين ما كنت وأوصاني بالصلاة

والزكاة ما دمت حياه

 

‘শিশুটি বলল, “আমি তো আল্লাহর বান্দা তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী বানিয়েছেন’। আর যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন এবং যতদিন আমি জীবিত থাকি তিনি আমাকে নামাজ ও যাকাত আদায় করতে আদেশ করেছেন’।’

বাইবেলে বলা হয়েছে Josheph এর সাথে যীশুর মা Mary তথা মরিয়মের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তারা একত্রে বসবাস করার পূর্বেই পবিত্র আত্মার মাধ্যমে Mary গর্ভবর্তী হয়েছিল। আর Josheph তা বুঝতে পেরেও Mary কে সরাসরি লজ্জা দিতে না চেয়ে আত্মগোপনের চিন্তা করেছিল। তখন প্রভু এক বিশেষ দূত রূপে দেখা দিয়ে তাকে বলল, হে Josheph, Mary কে বিয়ে করতে ভয় পেওনা। কারণ তার গর্ভের যা রয়েছে তা পবিত্র আত্মার শক্তিতে জন্মেছে। এর একটি ছেলে হবে। তুমি তার নাম রাখবে যীশু। তিনি লোকদেরকে পাপ হতে উদ্ধার করবে, ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলবে। Josheph দূতের বর্ণনানুযায়ী তাই করল। আর এভাবেই Josheph এর ঘরে যীশুর জন্ম হয়।

হযরত ঈসা (আ.) জন্মের পরই নবুওয়ত প্রাপ্ত হন। তাই শৈশব থেকেই তার মধ্যে যাবতীয় মানবীয় গুনাবলীর সমাবেশ ঘটে। জন্ম থেকেই ঈসা (আ.) নবী হলেও প্রকৃতপক্ষে নবুওয়তের দায়িত্ব পালন শুরু হয় ৩০ বছর বয়সে। ঈসা (আ.) আল্লাহর হুকুমে অনেক মু’জিযা দেখিয়েছেন। যেমন: তিনি মাটি দিয়ে পক্ষী তৈরী করে তাতে ফুক দিলে উড়ে যেত, জন্মন্ধকে ভালো করতেন। কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্য করতেন, মৃতকে জীবিত করতেন, কারো ঘরে কিছু থাকলে বলে দিতে পারতেন। কুরআনের দৃষ্টিতে তাঁকে হত্যা ও করা হয়নি, শূলেও চড়ানো হয়নি, এমনকি ক্রুশবিদ্ধও করা হয়নি। বরং মহান আল্লাহ পাক তাঁকে নিজের কাছে তুলে নিয়েছেন। অথচ বাইবেলের মতে হযরত ঈসা (যীশু) মানুষের নিকট ইঞ্জিলের বাণী প্রচার করলে তাঁর শীষ্য ও ভক্তদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকল যা পুরোহিতদের প্রতিহিংসার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। পুরোহিতরা তাকে সম্রাটের নিকট ধরে নিয়ে গেল এবং সম্রাট তাকে ধর্মদ্রোহীতার অপরাধে শূলে চড়িয়ে ক্রুশবিদ্ধ করে মৃত্যু দণ্ডে দণ্ডিত করল।

 

আরো জানুন: 

  1. হজরত মুহাম্মদ (স)  জীবনী
  2. ইমাম মুসলিম: হাদীস সংরক্ষণ ও সংকলনে ইমাম মুসলিম এর অবদান।
  3. ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল এর জীবনী ও মুসনাদ সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ
  4. ইমাম আবু দাউদ (র)-এর জীবনী ও তাঁর সুনান গ্রন্থের বৈশিষ্ট্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *