ইয়াহুদী ধর্ম কী? এর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ
ইয়াহুদী ধর্ম এর অনুসারীগণ মনে করেন, তাঁরা মূসা (আ:) নবীর অনুসারী এবং মূসা (আ:) এর ধর্ম ও হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর ধর্ম একই ধর্ম। ইব্রাহীম (আ:) এর ভাষা হিব্রু ভাষা। তাই ইব্রাহীম (আ:) থেকে মূসা (আঃ) পর্যন্ত সবাই হিব্রু বা ইবরানী ভাষাভাষী জাতি। একারণে হিব্রু জাতির ধর্ম হিসেবে তাদের ধর্মকে অনেকে হিব্রু ধর্ম বলেও অভিহিত করে। আল-কুরআনে তাদেরকে ‘কওমে মূসা’, ‘বনি ইসরাঈল’, ‘আহলে কিতাব’ ও ‘ইয়াহুদ’ নামে সম্বোধন করা হয়েছে। ইব্রাহীম (আ:) ও মূসা (আ:) ইয়াহুদী ছিলেন না ‘ইব্রাহিম (আ:) ইয়াহুদীও ছিলেন না, খ্রিষ্টানও ছিলেন না, তিনি ছিলেন উত্তম মুসলমান। তিনি এবং তাঁদের ধর্মও ইয়াহুদী ধর্ম ছিল না।’ আল-কুরআনে উল্লেখ আছে, كان إبراهيم يهوديا ولا نصرانيا ولكن كان حنيفا مسلما وما كان من المشركين ‘ইব্রাহিম (আ) ইয়াহুদীও ছিলনা, নাসারাও ছিলনা; বরং সে ছিল একনিষ্ঠ মুসলিম আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না।
আর মূসা (আ:) সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, وقال موسى يا قوم إن كنتم أمنتم بالله فعليه توكلوا إن كنتم مسلمين
‘মূসা (আঃ) বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমরা আল্লাহতে ঈমান এনে থাক এবং মুসলিম হয়ে থাক তাহলে তারই প্রতি নির্ভর কর। উভয় আয়াতে তাঁরা মুসলিম হিসেবে পরিচিত।
নামকরণ: ইয়াহুদীগণ মনে করেন তাঁদের নামকরণ হয়েছে তাঁদের নবী মূসা (আঃ) এর যুগে। মূসা (আ:) যখন ভ্রাতা হারূনকে দায়িত্ব দিয়ে তুর পাহাড়ে তাওরাত প্রাপ্তির জন্য গিয়েছিলেন তখন সামেরী নামক জনৈক ব্যক্তি গোবৎসের মূর্তি বানিয়ে তার পূজা-অর্চনা শুরু করেছিলেন। মূসা (আ:) তুর পাহাড় থেকে ফিরে এসে এই কথা শুনে রাগান্বিত হলেন। পরবর্তীতে তাঁরা মূর্তি পূজা পরিহার করে মূসা (আ:)-এর ধর্মে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসলেন। আল-কুআনের ভাষায়, আমরা আপনার দিকে প্রত্যাবর্তন করলাম। আবার কেউ কেউ বলেন, আরবী শব্দের অর্থ ঝুঁকে পড়া। তারা তাওরাত পাঠের সময় আগে-পিছে ঝুঁকে পড়ত।’
কেউ কেউ বলেন, ইয়াকুব (আ:) এর আর এক নাম ছিল ইসরাঈল। তাঁর ১২ পুত্র ছিল; তাঁরা প্রত্যেকেই স্ব স্ব নামে গোত্র গঠন করেছিলেন। চতুর্থ পুত্র ইয়াহুয়ার নামানুসারে একটি গোত্রের নাম হয় ইয়াহুদী। এই গোত্রের ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তির কারণে অথবা কেনআনে তারা ইয়াহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল সে কারণে তাদের ধর্মকে ইয়াহুদী ধর্ম বলা হয়।
কেউ কেউ বলেন ইয়াহুদী নাম হয়েছে অনেক পরে। ৬০৮ খ্রিঃ পূর্বে বুখতে নছর কর্তৃক ইসরাঈলী ও ইয়াহুদী রাষ্ট্রদ্বয়ের পতন এবং পরবর্তিতে পারস্য সম্রাট কুরস (সাইরাস) ৫৩৮ (খ্রিঃপূঃ) ব্যবিলন দখল করে বনি ইসরাঈলদেরকে ইয়াহুদী নামে ডাকতেন এবং তাদের ধর্মীয় আকীদাকে ইয়াহুদীবাদ হিসেবে উল্লেখ করেন। তখন থেকেই যারা ইয়াহুদীবাদে বিশ্বাসী তাদের ধর্ম ইয়াহুদী ধর্ম নামে অভিহিত হয় ।
মোটকথা ইয়াকুব (আ:) এর চতুর্থ পুত্র ইয়াহুয়া নামানুসারে বনি ইসরাঈলীদের মধ্যে একটি প্রভাবশালী জাতি গঠিত হয়েছিল। ইউসূফ (আ:) ইয়াকুব (আ:) সহ ভাইদেরকে মিসরে নিয়ে বসতি স্থাপন করলেও ইয়াহুয়ার বংশধর যারা কেনআনে (ফিলিস্তিনে) রয়ে গিয়েছিল তারা আস্তে আস্তে সেখানে শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং পরবর্তীতে রাজা জালুতের (জুলিয়াস) সময় তাদের একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত ছিল ইতিহাস তার স্বাক্ষী। মূসা (আঃ) এর নেতৃত্বে মিসর থেকে বনি ইসরাঈলগণ মুক্ত হয়ে আসলেও তাদের আদি বাসস্থান কেনআনে প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হয়ে সিনাই উপত্যকায় বসবাস শুরু করে। ইসরাঈলী বাদশা তালুত জালুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিলে জুড়া গোত্রের (ইয়াকুব (আ:) এর তৃতীয় পুত্র লেভীর বংশধর জুড়া অত্যন্ত প্রভাবশালী গোত্র ছিল সেই গোত্রে অনেক বিচারকের আবির্ভাব ঘটেছিল। দাউদ (আ:) জুড়া গোত্রের লোক ছিলেন।) দাউদ (আ:) তালুতের পক্ষে যুদ্ধে অংশ নিয়ে জালুতকে ধ্বংস করেন এবং পরে কেনআনী ইয়াহুদ ও সিনাঈ বনি ইসরাঈলের বাদশাহ হিসেবে ইতিহাস খ্যাত হন। তখন বনি ইসরাইলিরা ইয়াহুদী পরিচয় দিতে শুরু করে। কারণ তারা মূসা (আ:) এর নেতৃত্বে মিসর থেকে বের হয়ে এসে কেনআনী (ফিলিস্তিনী) দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে রাজী হননি। শাস্তি স্বরূপ সিনাই উপত্যকায় ৪০ বছর তাবু জীবন যাপন করেন। এই লজ্জা ঢাকার জন্য তারা বনি ইসরাঈল নামের পরিবর্তে ইয়াহুদী নাম ধারণ করে। দাউদ (আ:) এর পর সোলায়মান (আ:) বাদশাহ হয়। তার মৃত্যুর পর দুই পুত্র ইয়ারবুয়ান উত্তরাংশে নাবলুসকে রাজধানী করে বনি ইসরাঈলীদের নিয়ে সামেরীয় রাষ্ট্র গঠন করেন এবং রূহবয়াম দক্ষিণাংশে জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইয়াহুদী রাষ্ট্র গঠন করেন। বুখতে নছর ৬০৮ খ্রি:পূ: উভয় রাষ্ট্র দখল করে ধ্বংস যজ্ঞ চালায় এবং গ্রীক বীর আলেকজান্ডার ৩৩১ খ্রি:পূ: আরেকবার ধ্বংস যজ্ঞ চালায়। এভাবে বিভিন্ন সময় ধ্বংস যজ্ঞের ফলে ইয়াহুদী জাতির উপাসনালয় যা দাউদ (আ:) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বায়তুল মাকদাস এবং তাওরাত ও যবুর যা বায়তুল মাকদাসে সংরক্ষিত ছিল সব বিলীন হয়ে যায়। পুরোহিতগণ নতুনভাবে ধর্ম পুন:গঠন করেন। তারা মূসা (আ:) এর ধর্ম থেকে বিভ্রান্ত হয়ে গেলে আল্লাহ তা’আলা বণি সৎপথ প্রদর্শনের জন্য হযরত ঈসা (আ:) কে তাদের নবী রূপে প্রেরণ করেন। তারা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করে নিজেদেরকে ইয়াহুদী ধর্মের অনুসারী বলে দাবী করে। এখানেই ইয়াহুদী ধর্মের উদ্ভব।
ধর্ম প্রবর্তক: ইয়াহুদীরা মনে করে মূসা (আঃ) ইয়াহুদী ধর্মের প্রবর্তক নবী। তারা আরো মনে করে। মূসা (আ:) এর ধর্ম এবং ইব্রাহীম (আ:) এর ধর্ম একই ধর্ম। প্রকৃতপক্ষে জাতি ও ধর্ম এক জিনিস নয়। হযরত ইব্রাহীম (আ:) থেকে হযরত ইয়াকুব (আ:) পর্যন্ত তারা হিব্রু ভাষার অধিকারী হওয়ার কারণে হিব্রু বা ইবরানী জাতি হিসেবে প্রসিদ্ধ ছিলেন। হযরত ইয়াকুব (আ:) এর অপর নাম ইসরাঈল (আল্লাহর বান্দা)। তাঁর ১২ জন সন্তান ১২টি গোত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ইতিহাসে তাঁরা খুব প্রভাবশালী ছিলেন। তাঁরা ধর্ম, শিক্ষা সংস্কৃতিতে অনেক অবদান রেখেছিলেন। তাই তাদেরকে বনি ইসরাঈল জাতি বলা হয়।
হযরত ইয়াকুব (আ:) এর বংশধর মূসা (আ:) সহ হযরত দাউদ (আঃ) পর্যন্ত তাঁরা ছিলেন বনি ইসরাঈল জাতি। হযরত দাউদ (আ:) কেনআন ও সমেরীয় রাষ্ট্রের বাদশাহ হওয়ার পর হযরত ঈসা (আ:) পর্যন্ত তারা ছিলেন ইয়াহুদী জাতি। হযরত ঈসা (আ:) এর সময় তাঁর নবুওয়াত অস্বীকার করে নিজেদেরকে ইয়াহুদী ধর্মাবলম্বী বলে দাবী করে। হযরত ইব্রাহীম থেকে হযরত ঈসা (আ:) পর্যন্ত প্রত্যেকেই ইসলামের নবী ছিলেন। কেউই ইয়াহুদী নবী ছিলেন না। আল্লাহ তা’আলা বলেন:
وقال موسى يا قوم إن كنتم أمنتم بالله فعليه توكلوا إن كنتم مسلمين
‘মূসা (আ:) বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়, যদি তোমরা আল্লাহতে ঈমান এনে থাক এবং মুসলিম হয়ে থাক তাহলে তারই প্রতি নির্ভর কর।’
وما كان إبراهيم يهوديا ولا نصرانيا ولكن كان حنيفا مسلما وما كان من المشركين » ইব্রাহিম (আ) ইয়াহুদীও ছিলনা, নাসারাও ছিলনা; বরং সে ছিল একনিষ্ঠ মুসলিম আর সে মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিল না।
ইয়াহুদী ধর্মগ্রন্থ:
i. তাওরাত: তাওরাত শব্দের অর্থ ঐশীবাণী। এর দ্বারা ইয়াহুদীরা মূসা (আ:) এর উপর অবতীর্ণ পাঁচটি মৌলিক গ্রন্থকে (Pentatcuch)বুঝিয়ে থাকে যা তিনি স্বহস্তে লিখেছিলেন।
১. (আদি পুস্তক): আসমান, যমীনের সৃষ্টিতত্ত্ব এবং আদম (আ:) থেকে শুরু করে হযরত ইউসুফ (আ:) পর্যন্ত নবীগণের জীবনী।
২. (যাত্রা পুস্তক): ইউসুফ (আ:) এর মৃত্যুর পর থেকে বনী ইসরাইলীদের মিসর হতে বের হয়ে সিনাই উপত্যকায় প্রবাসের বিবরণ। দশ আজ্ঞা এর অন্তর্ভুক্ত।
৩. (লেবীয় পুস্তক): ইসরাঈল তথা ইয়াকুব (আ:) এর এক পুত্রের নাম। লেভী। লেডী গোত্রে মূসা (আ:) ও হারূন (আ:) এর জন্য; তাদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের বিবরণ; ধর্মীয় বিধান, হালাল-হারাম, উৎসব, মানত, পবিত্রতা, পুরস্কার ও শাস্তির বর্ণনা।
৪. (গনণা পুস্তক): মিসর থেকে বণী ইসরাঈলের বহির্গমন পরবর্তী ঘটনাসমূহ এবং তাদের সংখ্যাসমূহের বর্ণনা। বনী ইসরাঈলের ১২টি গোত্রের বিবরণ।
৫ (দ্বিতীয় বিবরণ): এ অধ্যায়ে পূর্ববর্তী বিধানসমূহের গুরুত্বের পুনরাবৃত্তি। মূসা (আঃ) এর মৃত্যু ও দাফন প্রভৃতি বিষয়ের বিবরণ ।
ii.তালমুদ (Talmud): তালমুদ হিব্রু শব্দ যার অর্থ শিক্ষা। ইয়াহুদী ধর্ম এর আইন উপদেশের সংক্ষিপ্তসার যা পুরোহিত ও নেতাদের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছিল তা ইয়াহুদী পণ্ডিত Dr.Ruhul Naz ৫৩৯ খ্রি: পূর্বাব্দে রচনা করেন এবং ১২০ জন ইয়াহুদী পণ্ডিত কর্তৃক অনুমোদিত গ্রন্থ। এর দুটি অংশ রয়েছে
- ১. মানসা বা
- ২. জামরাহ বা ব্যাখ্যা
iii (মদ) প্রটোকল: ইয়াহুদী জাতির সারা বিশ্বের বিচ্ছিন্ন জীবন যাপনের অভিজ্ঞতায় তাদের প্রতি বিভিন্ন দেশের আচরণের প্রেক্ষিতে প্রতিশোধ গ্রহণের কৌশল ও পরিকল্পনা প্রটোকল গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপর প্রভাব ও প্রতিপত্তি বিস্তারের পরিকল্পনা এই গ্রন্থে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ১৮১৭ সালে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী ব্রাসেলসে ইয়াহুদী পণ্ডিত ব্যক্তিরা এটিকে ধর্মীয় গ্রন্থের মর্যাদা দেয়।
দশ আজ্ঞা
১. আমি (ঈশ্বর) ব্যতীত তোমাদের আর কোন প্রভু নেই।
২. আমার (ঈশ্বর) কল্পনায় প্রতিকৃতি বানিয়ে তাতে পূজা-অর্চনা করবেনা।
৩. প্রয়োজন ব্যতিরেকে ঈশ্বরের নামোচ্চরণ করবে না, যদি কর তাহলে ঈশ্বরের শাস্তি থেকে মুক্তি নেই ।
৪. সাব্বাৎ দিবসের পবিত্রতা রক্ষার্থে ঈশ্বরের জন্য নির্ধারিত রেখে সপ্তাহের ছয়দিন পরিশ্রম করে শেষ দিবসে (শনিবার) বিশ্রাম নিবে।
৫.পিতা-মাতাকে সম্মান করবে ফলশ্রুতিতে যে প্রতিশ্রুত পবিত্রভূমি পরমেশ্বর তোমাকে দিচ্ছেন সেই ভূমিতে তুমি যেন দীর্ঘজীবী হও।
৬. মানুষ হত্যা করবে না।
৭. ব্যাভিচার করবে না। ৮. অপহরণ করবে না।
৯.প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দিবে না।
১০. প্রতিবেশীর ঘরের প্রতি লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকাবে না, প্রতিবেশীর স্ত্রী, দাসদাসী, বলদ, গাধা কোন কিছুর প্রতিই লোভ করবে না।
ধর্ম বিশ্বাস: সাব্বাৎ দিবস পালন: প্রভু ছয়দিনে বিশ্ব সৃষ্টি করে সপ্তম দিবসে বিশ্রাম করেছেন কাজেই সাব্বাৎ (শনিবার) দিবস প্রভুর উপসনার জন্য নির্দিষ্ট রেখে ঐ দিন বিশ্রাম করা, কোন কাজ না করা।
ইয়াহুদীদের উপসনালয় ‘সিনাগগ’ (Syanagogue) বা জিউস টেম্পল। তারা প্রত্যহ প্রত্যুষে, মধ্যাহ্নে এবং সন্ধ্যায় বিশেষ কায়দায় ‘তোরাহ’ এর অংশ বিশেষ পাঠ করে থাকে। তাদের প্রায় সকল প্রার্থনাতেই ‘শেমা কে বার বার উচ্চারণ করা অপরিহার্য মনে করা হয়।
ইয়াহুদী ধর্ম এ উপাসনা: সকল ধর্মেই উপাসনার কথা থাকলেও ইয়াহুদী ধর্ম এ উপাসনার পদ্ধতি সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানা যায় না। কেননা হযরত মূসা (আ.) কর্তৃক ঐশী বিধানাবলী পরবর্তীতে পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের কারণে প্রকৃত বিধানের অস্তিত্ব প্রায় বিলীন। বর্তমানে এ ধর্মে ইবাদতের বিধান সম্পর্কে যতটুকু জানা যায় তা কুরবানী, নামাজ, রোজা ও বিশেষ প্রার্থনার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
১. কুরবানী: ইয়াহুদীগণ নিজেদেরকে ইব্রাহীম (আ.) এর উত্তরসূরী মনে করে। তাই তারা কুরবানীকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় মনে করে।
২. রোজা: প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা এবং আশুরার রোজা পালন করে। বৎসরের ৭ম মাসে ফিরিস্তাদের মত যাবতীয় পানাহার থেকে বিরত থেকে তওবার মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করে।
৩. নামায: হিব্রু ভাষায় নামায অর্থ মালিকের নিকট ঝুঁকে পড়া (Tephillah)। দৈনিক তিনবার অর্থাৎ ভোরে, দুপুরে এবং সন্ধ্যায় এ নামায আদায় করতে হয়। এ নামাযে কোন সিজদা নেই। নামাযে বিভিন্ন প্রকার বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করে এবং মাথা ঢেকে রাখে। ভোরের নামাযে বিশেষ পোষাক পরিধান করা এ ছাড়াও আহারের পূর্বে শুকরানা দু’আ পাঠ, জীবনের প্রতিটি স্বাদ-আনন্দে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এবং প্রত্যহ পবিত্র গ্রন্থের কিছু আয়াত তেলাওয়াত করা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত।
৪. তারা শনিবারে উপাসনার জন্য সিনাগগে গমন করে। সকাল ৮টা থেকে একটানা ৩ ঘণ্টা উপাসনা চলে। সেখানে যাজক ব্যক্তি কালো জুব্বা পরিধান করে ও মাথা ঢেকে হিব্রু ভাষায় বিভিন্ন মন্ত্রপাঠ করে।
আরো জানুন: